মেহেদী পাতার মধ্যে কতো গুনাগুন আছে তা সম্পর্কে জেনে নিন
মেহেদী পাতার মধ্যে কতো গুনাগুন আছে তা জানলে আপনারা সকলেই উপকৃত হবেন। মেহেদী পাতার সাথে আমরা সবাই পরিচত।। কিন্তুু মেহেদী পাতার বিশেষ কিছু গুণাগুণ আছে তা আমরা অনেকেই জানিনা।
পেজ সূচিপত্র
মেহেদী পাতার ঔষধি গুনাগুন
মেহেদী পাতা দিয়ে শুধু আমরা হাত রাঙাতে পারবো বিষয়টা এমন না মেহেদী পাতা যে কত রোগের ঔষধ জানলে অবাক হবেন। শুধু মেহেদী পাতা এর নাম তা না ঔষধি পাতা বললেই ভুল হবেনা।কারণ অনেক রোগ থেকে মুক্তি দেয় এই মেহেদী পাতা। কি কি রোগ থেকে আমাদের আরোগ্য প্রদান করে নিম্নে দেওয়া হলোঃ
- মেহেদী পাতার সাথে সরিষার তেল দিয়ে ঘাড়ে মালিশ করলে ঘাড়ের ব্যথা কমে।
- মেহেদী পাতা বেটে নখে এবং চুলে লাগালে চুল ভালো থাকে,এবং চুলের গোড়া শক্ত করে চুল সিল্কি হয়।
- পায়ের তলায় মেহেদী বাটার প্রলেপ দিলে, চোখের গুটি উঠেনা।
- হাতে ছোচা পোকা বা হাতের যে চামড়া উঠে যায় মেহেদী বাটা প্রলেপ করে দিলে নিমিষেই হাতের তালুর চামড়া ওঠা ভালো হয়ে যাবে।
- শ্বেত রোগীর জন্য মেহেদী পাতার রস অনেক ভূমিকা রাখে।
- মেহেদী পাতা গরম পানিতে দিয়ে গোসল করলে গ্রীষ্ম কালে শরীরে ঘামের যে দূর্গন্ধ সেটা থাকে না।
- কয়েকটি মেহেদী পাতা সরিষার তেল এর সাথে চুলায় জ্বাল দিয়ে ঠান্ডা করার পর মাথার তালুতে ব্যবহার করলে টাক পড়া রোধ করবে এবং মাথা ব্যথা নিরাময় করে।
- কানে যদি কোনো সমস্যা হয়ে পুঁজ পড়ে। সে ক্ষেত্রে মেহেদী পাতার দু ফোঁটা রস কানে দিলে পুঁজ পড়া বন্ধ হয়ে যাবে।
- যে কোনো চুলকানি বা ঘা শুকাতে মেহেদী পাতা বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে,মেহেদী পাতার পেষ্ট ঘাড়,পিঠ বা ঘামাচি আক্রান্ত অন্যান্য জায়গায় লাগালে বেশ উপকৃত হবেন।
মেহেদী পাতা দিয়ে চুলের যত্ন ও হেয়ারপ্যাক তৈরির পদ্ধতি
মেহেদী পাতা লেবু মেথি এবং আমলকি দিয়ে সহজে ঘরোয়া উপায়ে বানিয়ে নিন হেয়ারপ্যাক।
চুল অনুযায়ী পরিমাণ মতো মেথী নিয়ে একটা পাত্রে পানি দিয়ে এক থেকে দেড় ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। ততক্ষণে মেথিটা ফুলে ডাবল হয়ে যাবে এবং খুব সুন্দর ভাবে ঝরঝরা হয়ে যাবে তারপরে নিতে হবে এ্যালোভেরা,এ্যালোভেরা পাতা বড় হলে একটি আর ছোট হলে দুটি কেটে রেখে দাড় করিয়ে রাখতে হবে কোন কিছুর সাহায্যে।
কারন এ্যালোভেরা কাটা অবস্থায় যে কস টা বের হয় তা আমাদের স্কিন এর জন্য খুবই ক্ষতিকারক। নিতে হবে এক কাপ থেকে দেড় কাপ পরিমান মেহেদী পাতা, দুইটা লেবু এর সাথে এক্সটা কিছু এড করতে চাইলে আপনারা আমলকি এড করতে পারেন।
ফাইনালি সব কিছু রেডি হয়ে গেলে ভিজিয়ে রাখা মেথি পানি থেকে ছেকে বিলিন্ডার এ নিয়ে আধাভাঙা করে নিতে হবে। অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন পুরোপুরি ব্লেন্ড না হয় কেননা পুরো ব্লেন্ড হয়ে গেলে আপনাদের ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে নিতে একটু সমস্যা হবে।
তাই চেষ্টা করবেন আধা ভাঙা করে নিতে এরপর আমলকি টাকে নিয়ে সেটাকেও একটু আধা ভাঙা করে নিতে হবে তবে,আপনারা চাইলে বটি বা ছুরির সাহায্যে কেটে নিতে পারবেন। এরপর এ্যালোভেরার উপরের অংশ কেটে ফেলে ভিতরের যে শ্বাস সেটাকে বের করে
নিতে হবে একটু ছোট করে কেটে নিবেন এতে করে এর নির্যাস টা তেলের সাথে খুব ভালো করে বের হবে এর আরেকটা প্লেটে নিতে হবে দেড় কাপ পরিমানে নিম পাতা, দেড় কাপ পরিমানে মেহেদী পাতা আর ১ কাপ পরিমানে পেঁয়াজ কুচি এখানে সব গুলো উপাদান গুরুত্বপূর্ণ আপনারা চাইলে আরো
অনেক কিছু এড করতে পারেন যেমন জবা ফুল, হরতোকি, কালোজিরে, তিলের তেল এখানে বিভিন্ন জিনিস আরো এড করা যায়। এবার নিয়ে নিবো, ১ লিটার পরিমানে নারিকেল তেল(Coconut oil) আপনারা পরিমাণ মতো নিতে পারবেন এখন সব উপকরন নিয়ে দিয়ে দিতে হবে তেলের মধ্যে তবে
আপনারা তেলের পরিমান কম নিলে বাকি উপকরণ গুলো কম করে নিবেন তার পর চুলায় নিয়ে জ্বাল দিবেন দেখবেন প্রথমের কালার চেন্জ হয়ে সুন্দর একটা কালার আসবে সম্পন্ন তখন হবে যখন দেখবেন এটা থেকে সুন্দর একটা ফ্লেভার আসবে আর পেঁয়াজ এর কালার টা হালকা ব্রাউনি হয়ে আসবে আর
তখনি এটাকে চুলা থেকে নামিয়ে নিয়ে ছেকে নিতে হবে তারপরে তেল গুলো ছেকে নিয়ে একটা কাঁচের জারে সংরক্ষণ করে রাখতে পারবেন।
মেহেদী পাতার পাউডার ও সংরক্ষণ পদ্ধতি ও উপকারিতা
চুল লম্বা করার জন্য চুলের গোড়া শক্ত করার জন্য আমরা হয়তো বাজার থেকে মেহেদী পাতা বা বিভিন্ন মেহেদী প্যাক কিনে ব্যবহার করে থাকি। গাছের পাতা ব্যবহার করতে চাইনা কেননা মেহেদী বাটা বাটির একটা ঝামেলা থাকে বা অনেক সময় মেহেদী পাতা পাওয়া যায় না বলে ।
সেজন্য জেনে নিন বাটা বাটি ঝামেলা ছাড়াই কিভাবে মেহেদী পাতা সংরক্ষণ করে ব্যবহার করবেন!
মেহেদী পাতার পাউডার ও সংরক্ষণ পদ্ধতিঃ
প্রথমে গাছ থেকে মেহেদী পাতা পেরে নিতে হবে এরপর একটা পাত্রে নিয়ে মেহেদী পাতা গুলো পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে এইবার সম্পূর্ণ গোছালো ভাবে কড়া রোদে একদম শুকনো করে শুকিয়ে নিতে হবে। তারপরে সবগুলো শুকনো মেহেদী পাতা গুলো ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিতে হবে
মেহেদী পাতা একদম গুড়ো হয়ে গেলে সেটাকে প্লাস্টিক বা কাঁচের জারে দুই মাস সংগ্রহ করে রাখতে পারবেন।এই মেহেদী গুড়ো হেয়ার প্যাক হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন কারন মেহেদী পাতা চুলের জন্য খুবই উপকার।মেহেদী গুড়োর সাথে পরিমান মতো ন্যাচরাল পানি দিয়ে প্যাক বানিয়ে চুলে লাগাতে পারবেন।
শেষ কথা
ঈদ বা বিভিন্ন Special দিনগুলোতে আমরা মেহেদী পাতা দিয়ে হাত রাঙায়। ছেলে মেয়ে উভয় বিশেষ করে মেয়েরা সবসময় হাতে মেহেদী রাঙাতে পছন্দ করে থাকি।শুধু যে মেহেদী পাতা হাত রাঙানোর কাজে ব্যবহৃত হয়না তা আমরা উপরের আলোচনা থেকে বুঝতে পেরেছি।মেহেদী পাতার গুনাগুণের
কোনো শেষ নেয় তাই আমাদের কোন সমস্যা হলে যেই সমস্যার সমাধান মেহেদী পাতা থেকে পেতে পারি সেই ক্ষেত্রে আমরা মেহেদী পাতা ব্যবহার করবো কেননা মেডিসিন না খেয়ে যদি মেহেদী পাতা দিয়ে আরোগ্য লাভ করি সেইটাই আমাদের জন্য ভাল বলে আমি মনে করি।মেডিসিন যত কম খাওয়া
যায় ততোই ভাল।প্রাকৃতিক উপায়ে সব কিছুর সমাধান করাটা সব থেকে ভাল কেননা প্রাকৃতিক জিনিসগুলোতে কোন ক্ষতিকারক কেমিক্যাল থাকে না।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url