জেনে নিন কবুতর লালন পালনের কিছু নিয়ম
শখের বসে আমরা অনেকে পশুপাখি পালন করি কিন্তু ওদের পর্যবেক্ষণ কিভাবে করতে হবে সেইটা আমরা না জেনে আমাদের শখের জিনিসগুলো নষ্ট করে ফেলি। মানুষের শখের জিনিসের মধ্যে কবুতর কিন্তু অধিকাংশ মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে।
বিশেষ করে অনেক ছেলেরা আছে কবুতর পোষতে ভালবাসে,তারা একেকজন বলা যাই কবুতর প্রেমী। তাই কবুতর আমরা কিভাবে লালন পালন এইটা জানা অত্যন্ত জরুরি।
পেজ সুচিপত্রঃ
কবুতরের ঘর কেমন হওয়া উচিত
জাত বুঝে কবুতর লালন পালন করা
কবুতরকে কেমন খাবার দিতে হবে
কবুতরকে কৃমি কোর্স করানো
সুস্থ রাখার জন্য কবুতরকে যা খাওয়ানো উচিত
কবুতরের পায়খানা পর্যবেক্ষণ করা
কবুতরের চিকিৎসা যেভাবে করাতে হবে
কবুতরের ঘর কেমন হওয়া উচিত
কবুতরের ঘর নির্মাণ করার আগে মাথায় রাখতে হবে ঘরে যেন আলো বাতাস প্রবেশ করতে পারে। আলো বাতাস প্রবেশ না করতে পারলে কবুতর মারা যাওয়ার সম্ভবনা থাকে। এছাড়াও আলো বাতাস সম্পূর্ণ ঘরে এরা খুব দ্রুত বাড়ে কারন আমরা জানি কবুতর উড়ন্ত প্রানী, এরা আকাশে উরে বেড়াই।
আলো বাতাসে থাকতে এরা অনেক ভালবাসে। কবুতরের ঘর সব সময় পরিস্কার পরিছন্ন রাখতে হবে কেননা অপরিস্কার রাখলে বিভিন্ন রোগ জীবাণু ছড়াবে। রোগ জীবাণু ছড়ালে তারা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে থাকবে।
তাই সব সময় খেয়াল রাখতে হবে তাদের ঘর নোংরা হলে সাথে সাথে পরিস্কার করতে হবে। কবুতরের ঘরকে লফট বলা হয়। আরও একটা জিনিস খেয়াল রাখতে হবে তাদের লফটের মধ্যে খাবারের পাত্র ও পানি খাওয়ার পাত্র সব সময় পরিস্কার রাখতে হবে। তানাহলে খাবারের মাধ্যমে তাদের পেটে জীবাণু প্রবেশ করবে।
জাত বুঝে কবুতর লালন পালন করা
আপনারা যদি নতুন জাতের কবুতর পালন করতে চান তাহলে ওই কবুতর সম্পর্কে আগে ভালো করে জেনে তারপরে সংগ্রহ করুন যেমন ধরুন কবুতরের বয়স কত এ পর্যন্ত কতবার ডিম বাচ্চা করেছে কবুতরের জাতটি কি ঠিক আছে কিনা কবুতরের রোগ জীবাণু আছে কিনা ইত্যাদি এই সমস্ত বিষয়গুলা
পর্যবেক্ষণ করতে হবে। কবুতর যখন আপনার লপ্ট এ নিয়ে আসবেন তারপর অবশ্যই কবুতরকে এক সপ্তাহ বায়ু সিকিউরিটি মেন্টেন করে রাখবেন যেমনটা বর্তমান সিচুয়েশনে আমরা কোয়ারেন্টাইন বলে থাকি তো এক সপ্তাহ কোয়ারেন্টাইনে রাখার পরে দেন আপনার কবুতরের লপ্টের সাথে মিশিয়ে
দিবেন। কেননা অন্য জাতের কবুতরের মধ্যে রোগ থাকলে তা আপনার লফটের কবুতরের সাথে মিশলে বিপদজনক হতে পারে তাই কোয়ারেন্টাইনে রাখাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
কবুতরকে কেমন খাবার দিতে হবে
কবুতরকে অবশ্যই ভালো মানের গ্রিট খাদ্য হিসেবে দিতে হবে। যেন তারা গ্রিট খেয়ে সহজে হজম করতে পারে। এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন খাওয়ার পানি কবুতরকে খাওয়াতে হবে। যদি কবুতরকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ভালো মানের খাবার পানি না দেন তাহলে কবিতার ঘন ঘন বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হবে।
তাই অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে পানিটা যেন অবশ্যই পরিস্কার পরিছন্ন ভাল মানের খাওয়ানো হয়। কবুতরকে যে খাবারটি দিচ্ছেন সেটা যেন অবশ্যই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়। বাজার থেকে যে খাবার গুলো কিনে আনবেন সে খাবার গুলো অবশ্যই চেষ্টা করবেন সুন্দর করে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে ঝর ঝর করে
তারপরে সংরক্ষণ করতে এবং পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন সময়ে কবুতরকে সেই খাবারগুলা পরিবেশন করবেন এতে করে কবুতর ঘনঘন বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হবে না।
কবুতরকে কৃমি কোর্স করানো
কবুতরকে কৃমি কোর্স করানোটা অনেক জরুরি।তাহলে আপনার কবুতর কৃমিতে আক্রান্ত হলে কবুতরের গ্রোথ নষ্ট হয়ে যাই। তাই আপনি যেটা করবেন মাঝে মাঝে কবুতরকে কিছু সময়ের জন্য রোদে রাখবেন। যদি আপনি আবদ্ধ অবস্থায় কবুতর পালন করে থাকেন সেক্ষেত্রে মাঝে মাঝে
কবুতরকে রোদে রাখবেন এতে করে হবে কি আপনার কবুতরের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। ৯০ দিন পর পর অবশ্যই কবুতরকে কৃমির কোর্স করাবেন মানে তিন মাস পর পর। কারণ আমরা কবুতরকে যতই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করি না কেন তাদের যে ডাস্ট এবং ড্রপিং এগুলোর
সুস্থ রাখার জন্য কবুতরকে যা খাওয়ানো উচিত
চেষ্টা করবেন সবসময় কবুতরকে প্রাকৃতিক উপায়ে সুস্থ রাখার জন্য। কবুতরকে প্রাকৃতিক উপাদান যেমন রসুন কালোজিরা তুলসী পাতা আদা ইত্যাদি খেতে দিবেন। নিয়মিত কবুতর কে এগুলো খাওয়ালে কবুতর সুস্থ থাকবে। সব সময় চেষ্টা করবেন যেন কবুতরকে প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে কবুতরের
ট্রিটমেন্ট করানো যায়। প্রাকৃতিক উপাদান গুলোর মধ্যে কোন ইফেক্ট নাই এতে করে আপনার কবুতর অসুস্থ হয়ে পড়বে না। আপনার কবুতর অন্যান্য যে প্রাকৃতিক উপাদান গুলো রয়েছে যেগুলা অ্যান্টিঅক্সিজেন অন্যান্য যে ভিটামিন মিনারেল রয়েছে সেগুলো থেকে আপনার কবুতর কিন্তু আরো
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে এবং আপনার কবুতর কিন্তু আগের থেকে অনেক বেশী সুস্থ সবল থাকবে। সব সময় খেয়াল করবেন যেন আপনার কবুতরকে প্রাকৃতিক উপাদানগুলো দিয়ে ট্রিটমেন্ট করানো যায় কবুতর অসুস্থ হলে।
কবুতরের পায়খানা পর্যবেক্ষণ করা
নিয়মিত কবুতরের পায়খানা পর্যবেক্ষণ করুন অর্থাৎ কবুতরের পায়খানা স্বাভাবিক আছে কিনা সেটা খেয়াল করতে হবে। কবুতরের পায়খানা সেটা কি স্বাভাবিক কিনা। স্বাভাবিক বলতে বুঝায় কবুতরের যে শক্ত পায়খানা হওয়ার কথা সেটা হচ্ছে কিনা। এমন যেন না হয়ে যায় কবুতর যে পায়খানা করছে অর্থাৎ
কবুতরের ড্রপিং টা হচ্ছে সে ড্রপিংটা সবুজ বা পানি পানি বা ডায়রিয়া পাতলা পাতলা টাইপের পায়খানা এবং চুনা পায়খানা ও যাতে না হয়। এসব ড্রপিং দেখে কবুতরের যে রোগ হয় সেটা নির্ণয় করতে পারবেন। এবং দ্রুত চিকিৎসা করাবেন।
কবুতরের চিকিৎসা যেভাবে করাতে হবে
কবুতর অসুস্থ হইলে অভিজ্ঞ কারো পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা করাবেন কারণ আপনি যদি অনভিজ্ঞ হন। সেই ক্ষেত্রে আপনি সঠিক রোগ নির্ণয় করতে পারবেন না। এবং আপনি রোগ নির্ণয় না করতে পারার কারণে আপনি কবুতরকে সঠিক চিকিৎসা দিতে পারবেন না। তাই আপনার অভিজ্ঞ কারো পরামর্শ
নিয়ে চিকিৎসা করানো উচিত হবে।তবে ভুল্ভাল চিকিৎসা করানো যাবেনা এতে কবুতরের ক্ষতি হবে। কবুতরকে অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো থেকে বিরত থাকুন। কারন কবুতরের শরীরে প্রচুর পরিমানে ইফেক্ট ফেলে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ। ওষুধের উপর নির্ভরতা কমিয়ে প্রাকৃতিক উপাদান
গুলো ব্যবহার করতে থাকুন।কবুতরের মাসিক কোর্স যথাযথ সম্পন্ন করতে হবে কবুতরের এই যে মান্থলি একটা রুটিন রয়েছে। আপনি আপনার কবুতরকে শুরুর দিকে ক্যালসিয়াম মাঝের দিকে ভিটামিন শেষের দিকে বিভিন্ন রোগের জন্য পায়খানার জন্য বা ঠান্ডার জন্য এই যে কোর্স গুলা এগুলা
চেষ্টা করবেন। যে সবসময় প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে যেন দেওয়া যায়, যেমন ক্যালসিয়ামের জন্য গ্রিট দিতে পারেন বা ডিমের খোসা দিতে পারেন। ভিটামিনের জন্য আপনার কবুতরকে আপনি বিভিন্ন রকমের সিড মিক্স খাওয়াতে পারেন । বিভিন্ন মেডিসিন কোর্সের জন্য কালোজিরা আদা, দার চিনি
এগুলো ব্যবহার করতে পারেন এগুলা ব্যবহার করলে আপনার কবুতর সব সময় সুস্থ থাকবে। আর মাসিক কোর্স গুলো সব সময় নিয়মিত করার চেষ্টা করবেন কারণ আপনার কবুতর যেন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আগে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রাখতে পারে সেই জন্য।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url